আবগারি শুল্ক কি ? জানুন এর প্রভাব, উদ্দেশ্য ও পণ্যের উপর শুল্ক প্রয়োগ

mybdhelp.com-আবগারি শুল্ক কি
ছবি : MyBdhelp গ্রাফিক্স

আবগারি শুল্ক কি, আবগারি শুল্ক বা Excise Duty একটি বিশেষ ধরনের পরোক্ষ কর যা সাধারণত দেশে উৎপাদিত বা আমদানি করা কিছু পণ্যের উপর আরোপিত হয়। এটি প্রধানত পণ্য উৎপাদনকারী বা আমদানিকারকদের কাছ থেকে নেওয়া হয়, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার প্রভাব গ্রাহকদের উপর পড়ে। এই শুল্ক ব্যবস্থার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সরকারের রাজস্ব সংগ্রহ করা এবং কিছু নির্দিষ্ট পণ্য বা সেবা ব্যবহারের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা। আসুন বিস্তারিত জানি, আবগারি শুল্ক কীভাবে কাজ করে এবং এটি আমাদের অর্থনীতি এবং জীবনযাত্রার ওপর কীভাবে প্রভাব ফেলে।


আবগারি শুল্কের সংজ্ঞা এবং গুরুত্ব (Definition and Importance of Excise Duty)

এটি হলো এক ধরনের কর যা সাধারণত বিশেষ কিছু পণ্যের উপর আরোপিত হয়। এই পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে – তামাকজাত দ্রব্য, অ্যালকোহল, গাড়ি, পেট্রোল ইত্যাদি। সরকার এসব পণ্যের উৎপাদন বা বিক্রয়ের সময় এই কর নেয়। এটি একটি পরোক্ষ কর, অর্থাৎ শেষ পর্যন্ত এই করের বোঝা সাধারণত ভোক্তা বা গ্রাহকদের ওপর পড়ে।

কেন আবগারি শুল্ক গুরুত্বপূর্ণ?

  • সরকারের রাজস্ব সংগ্রহ: আবগারি শুল্কের মাধ্যমে সরকার আয়ের বড় একটি উৎস পায়। এই আয় রাষ্ট্রীয় অবকাঠামো উন্নয়ন, সামাজিক প্রকল্প, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করা হয়।
  • বিশেষ পণ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ: কিছু পণ্য যেমন তামাক বা অ্যালকোহল এর ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে শুল্ক আরোপ করা হয়। এর মাধ্যমে সরকার জনগণের স্বাস্থ্যের প্রতি মনোযোগ দেয় এবং এই পণ্যগুলোর অতিরিক্ত ব্যবহার কমানোর চেষ্টা করে।
  • অর্থনীতির ভারসাম্য রক্ষা: আবগারি শুল্কের মাধ্যমে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পায়, ফলে এর ব্যবহার কমে যেতে পারে। এটি কিছু ক্ষেত্রে সুরক্ষা প্রদান করে দেশের ব্যবসা ও শিল্পকে।

আবগারি শুল্কের আইন ও নিয়মাবলি (Excise Duty Laws and Regulations)

প্রতিটি দেশে আবগারি শুল্কের জন্য আলাদা আইন ও নিয়মাবলি থাকে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে, আবগারি শুল্ক এবং কাস্টমস শুল্ক দুটি বিষয় একসঙ্গে ব্যবহৃত হয়। এসব শুল্ক সাধারণত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে সংগ্রহ করা হয় এবং তা সোজা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হয়।

বাংলাদেশে আবগারি শুল্কের আইন:

বাংলাদেশে আবগারি শুল্কের জন্য আইন ও বিধিমালা যথাযথভাবে নির্ধারিত হয়েছে। এই শুল্ক কিভাবে কার্যকর হবে তা ঠিক করা হয় মিনি বাজেট বা জাতীয় বাজেট এর মাধ্যমে। বাংলাদেশে যেসব পণ্য শুল্কের আওতায় আসে, তাদের মধ্যে প্রধানত তামাক, অ্যালকোহল, ইলেকট্রনিক সামগ্রী, গাড়ি ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত থাকে।

শুল্ক আদায়ের প্রক্রিয়া:

১. পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান: যে প্রতিষ্ঠান পণ্য উৎপাদন বা বিক্রি করছে, সে প্রতিষ্ঠান কর্তৃক শুল্ক পরিশোধ করা হয়। ২. কাস্টমস ও শুল্ক বিভাগ: এই শুল্ক সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হার অনুযায়ী পরিশোধ করা হয় এবং সেগুলি কাস্টমস বিভাগ কর্তৃক ব্যবস্থাপনা করা হয়।

সরকারি তহবিলে প্রবাহিত হওয়ার পর, এই রাজস্ব সাধারণত দেশের উন্নয়নমূলক কাজে ব্যবহৃত হয়।


আবগারি শুল্কের উদ্দেশ্য ও প্রয়োজনীয়তা (Purpose and Necessity of Excise Duty)

আবগারি শুল্কের মূল উদ্দেশ্য বিভিন্ন দিক থেকে অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা এবং সরকারের রাজস্ব সংগ্রহের সুবিধা প্রদান করা। এই শুল্কের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের পণ্য ও সেবার ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা হয় এবং জনগণের উপর সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব পড়তে পারে।

সরকারের রাজস্ব আয়:

  • আবগারি শুল্ক সরকারের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ রাজস্ব উৎস। বিশেষভাবে তামাক, অ্যালকোহল এবং ডিজেল পেট্রোলের মতো পণ্যের উপর শুল্ক আকারে জমা হওয়া টাকা সরকারের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যবহার করা হয়।

ভোক্তাদের জন্য প্রভাব:

  • একদিকে শুল্ক বাড়লে পণ্যের দাম বাড়তে পারে, অন্যদিকে সরকার বিভিন্ন সেবা প্রদানে আরো সক্ষম হয়। উদাহরণস্বরূপ, তামাকের ওপর শুল্ক বাড়ানোর মাধ্যমে সরকার তামাক ব্যবহার কমাতে চায়। এটা মানুষের স্বাস্থ্যগত ক্ষতি কমানোর জন্য একটি কার্যকরী পদক্ষেপ হতে পারে।

দেশীয় শিল্পের সুরক্ষা:

  • এক্ষেত্রে দেশের ব্যবসা বা শিল্পক্ষেত্রের সুরক্ষা এবং বিদেশী পণ্যের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। উচ্চ শুল্কের মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে বিদেশী পণ্যগুলো প্রবেশে বাধা প্রদান করা হয়, যাতে দেশীয় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো উপকৃত হতে পারে।

আবগারি শুল্কের প্রভাব (Impact of Excise Duty)

আবগারি শুল্কের বিভিন্ন ধরনের প্রভাব থাকে, যা দেশের অর্থনীতি, ব্যবসা এবং সাধারণ জনগণের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। এসব প্রভাব ইতিবাচক এবং নেতিবাচক—যতটা সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি হয়, ততটাই কিছু পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়ে ভোক্তাদের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

অর্থনৈতিক প্রভাব:

  • রাজস্ব আয় বৃদ্ধি: আবগারি শুল্কের প্রধান লক্ষ্য হলো সরকারকে রাজস্ব প্রদান করা। এটি দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আয় উৎস হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষভাবে দেশীয় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এবং আমদানিকারকরা যখন শুল্ক প্রদান করেন, তখন এই অর্থ সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্পে ব্যবহার করা হয়।
  • বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্বাস্থ্যখাতে ব্যবহার: এই রাজস্বের কিছু অংশ সরকারের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অবকাঠামো খাতে ব্যবহার করা হয়, যা দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সহায়ক হয়।

ভোক্তার ওপর প্রভাব:

  • দামের বৃদ্ধি: আবগারি শুল্ক পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। যেমন, তামাক, অ্যালকোহল এবং পেট্রোলের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির ফলে এসব পণ্যের দাম বাড়ে, যা সরাসরি ভোক্তাদের ওপর প্রভাব ফেলে। তবে, এর ফলে সরকারও কিছু পণ্য ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে সক্ষম হয়।
  • বাজারে অবৈধ কার্যক্রম: কিছু সময় শুল্ক বৃদ্ধির কারণে ভোক্তারা শুল্ক ফাঁকি দিয়ে অবৈধ বাজার থেকে পণ্য কিনতে উৎসাহিত হতে পারে, যেমন অবৈধ তামাক বা মদ বিক্রির ঘটনা বাড়তে পারে।

বাজার নিয়ন্ত্রণ:

  • সরকার কিছু পণ্যের ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ রাখতে সক্ষম হয় আবগারি শুল্কের মাধ্যমে। যেমন, তামাক এবং মদ ব্যবহারে শুল্ক বৃদ্ধি করা হলে মানুষের এদের প্রতি আগ্রহ কিছুটা কমতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদে জনস্বাস্থ্য ভালো হতে পারে।

আবগারি শুল্কের ধরন (Types of Excise Duty)

আবগারি শুল্ক বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, যা নির্ভর করে পণ্যের ধরন, উৎপাদন প্রক্রিয়া এবং ভোক্তার চাহিদার ওপর। বাংলাদেশে শুল্কের কয়েকটি মূল ধরন রয়েছে:

১. প্রযোজ্য পণ্যের ওপর শুল্ক (Specific Excise Duty):

এই ধরনের শুল্ক পণ্যের পরিমাণ বা ইউনিট অনুসারে আরোপিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, এক সিগারেট প্যাকেটের ওপর নির্দিষ্ট পরিমাণ শুল্ক আরোপ করা হয়। এটি এক ধরনের নির্দিষ্ট পরিমাণ শুল্ক যেখানে প্রতি ইউনিট বা পরিমাণের জন্য নির্ধারিত একটি মূল্য নেয়া হয়।

২. মূল্যভিত্তিক শুল্ক (Ad Valorem Excise Duty):

এটি পণ্যের মূল্য বা বাজার মূল্য অনুযায়ী শুল্ক নির্ধারণ করা হয়। যখন কোনো পণ্যের দাম বাড়ে, তখন তার উপর আরোপিত শুল্কও বৃদ্ধি পায়। উদাহরণস্বরূপ, গাড়ির উপর মূল্যভিত্তিক শুল্ক আরোপ করা হয়, যার মানে গাড়ির মূল্য যত বেশি হবে, তত বেশি শুল্ক দিতে হবে।

৩. মিশ্র শুল্ক (Compound Excise Duty):

এই ধরনের শুল্ক দুটি পদ্ধতিকে একত্রিত করে—একটি ইউনিট হিসেবে এবং অন্যটি মূল্য অনুযায়ী। এই ধরনের শুল্ক সাধারণত এমন পণ্যের জন্য নির্ধারণ করা হয় যা অনেক পরিবর্তনশীল হয়, যেমন উচ্চ প্রযুক্তির পণ্য বা বৈশ্বিক বাজারে বিক্রি হওয়া পণ্য।


আবগারি শুল্কের সম্পর্কিত কিছু চ্যালেঞ্জ (Challenges Related to Excise Duty)

যদিও আবগারি শুল্ক সরকারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ রাজস্ব উৎস, এর সঙ্গে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে যা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জন্য কঠিন হতে পারে। নিচে কিছু প্রধান চ্যালেঞ্জ তুলে ধরা হলো:

১. শুল্ক ফাঁকি (Excise Duty Evasion):

  • শুল্কের হার বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে কিছু ব্যবসায়ী বা ভোক্তা শুল্ক ফাঁকি দিয়ে অবৈধ বাজারে পণ্য বিক্রি করতে পারে। যেমন, অবৈধ তামাক বা মদ উৎপাদন করা হতে পারে, যার ফলে সরকার রাজস্ব হারাতে পারে এবং জনস্বাস্থ্য খাতে বড় সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

২. বাজারে মূল্যস্ফীতি (Inflation in the Market):

  • আবগারি শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে প্রভাব পড়ে পণ্যের দামেও। বাজারে মূল্যস্ফীতি বাড়ানোর ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয়ও বৃদ্ধি পায়। বিশেষভাবে, যেসব পণ্য শুল্কের আওতায় আসে, তাদের দাম বেড়ে যাওয়ার ফলে নিম্ন আয়ের জনগণের উপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

৩. বিদেশী পণ্যের প্রবাহ (Import of Foreign Goods):

  • দেশে উচ্চ শুল্কের কারণে বিদেশী পণ্যগুলি বিদেশ থেকে প্রবাহিত হতে পারে এবং দেশের উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষত, যদি শুল্কের হার খুব বেশি হয়, তবে বিদেশী পণ্যের দাম সস্তা হতে পারে এবং স্থানীয় বাজারে তার চাহিদা বেড়ে যেতে পারে, যা দেশীয় শিল্পের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

৪. পণ্যের পরিবর্তনশীল চাহিদা (Fluctuating Demand for Products):

  • কিছু পণ্য যেমন অ্যালকোহল বা তামাকের ব্যবহার যখন সামাজিকভাবে আরও গ্রহণযোগ্য হয়, তখন শুল্কের পরিমাণ কমানোর দাবিও ওঠে। তবে এই ধরনের পরিবর্তনগুলোর ফলে সরকারকে পণ্যের ব্যবহার এবং শুল্কের সামঞ্জস্য বজায় রাখতে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়।

আবগারি শুল্ক এবং ভবিষ্যত প্রবণতা (Excise Duty and Future Trends)

আবগারি শুল্ক ভবিষ্যতে আরও কিছু পরিবর্তন ও উন্নতির মুখোমুখি হতে পারে, যা সরকার এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। বিশ্বব্যাপী ডিজিটালাইজেশন এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের গতিপথ পরিবর্তন, বিশেষ করে ই-কমার্স এবং ভোক্তা আচরণের উন্নতি, আবগারি শুল্ক ব্যবস্থাকে নতুন রূপ দিতে পারে।

ডিজিটাল শুল্ক ব্যবস্থার উদ্ভব:

বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল পণ্য এবং সেবার চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পরিবর্তন আবগারি শুল্ক ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজড করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, বৈশ্বিক পণ্য সরবরাহ চেইন, অনলাইন মার্কেটপ্লেস এবং ডিজিটাল লেনদেনের উপর শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। এই ধরনের ব্যবস্থা দেশে আয়ের উৎস বাড়াতে সহায়ক হবে এবং শুল্ক ফাঁকি রোধ করবে।

ট্যাক্স ও শুল্ক সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সহযোগিতা:

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ একযোগে শুল্ক ব্যবস্থার উন্নয়ন ও বাস্তবায়ন করতে পারে, যাতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং আঞ্চলিক অর্থনীতির মধ্যে কোনো প্রতিবন্ধকতা না সৃষ্টি হয়। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশ যদি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সাথে শুল্ক সংক্রান্ত সহযোগিতা বৃদ্ধি করে, তবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলি আরও স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করতে পারবে এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট হবে।

শুল্ক সংক্রান্ত বৈশ্বিক প্রবণতাও পরিবর্তনশীল:

বর্তমানে কিছু দেশে শুল্ক কমানোর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, যেমন কিছু ই-কমার্স পণ্য বা প্রযুক্তি পণ্যের ওপর শুল্ক কমানো হচ্ছে। বাংলাদেশেও এসব পণ্যের জন্য শুল্ক কাঠামো পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে, যেহেতু দেশে প্রযুক্তি এবং নিত্যনতুন পণ্যের ব্যবহার বাড়ছে। ভবিষ্যতে, যদি দেশের শুল্ক নীতি আধুনিকায়িত হয়, তবে তা বাংলাদেশের জন্য একটি উন্নত অর্থনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে।

নতুন পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ এবং শুল্ক:

বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা এবং পরিবেশগত সচেতনতা বাড়ানোর সাথে সাথে, কিছু পণ্য যেমন প্লাস্টিকের ব্যবহারে শুল্ক আরোপের প্রবণতা হতে পারে। পরিবেশগত দৃষ্টিকোণ থেকে, শুল্ক বৃদ্ধি বা কমানোর মাধ্যমে সরকারের লক্ষ্য হবে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা। যেমন, পরিবেশবান্ধব পণ্যকে উৎসাহিত করা এবং পরিবেশবিরোধী পণ্যগুলির ওপর শুল্ক বৃদ্ধি করা।

আরও জানুনঃ ইপিজেড কি ? বাংলাদেশে এর সুবিধা, গুরুত্ব ও কার্যক্রম


উপসংহার (Conclusion)

আবগারি শুল্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক এবং সামাজিক কাঠামো তৈরি করে যা সরকারের রাজস্ব সংগ্রহে সহায়ক হয়। বিভিন্ন প্রকার শুল্কের মাধ্যমে, সরকার দেশের অর্থনৈতিক পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়, তবে এর প্রভাব সরাসরি সাধারণ জনগণের ওপর পড়ে। সাধারণভাবে, আবগারি শুল্কের মাধ্যমে দেশের আর্থিক শক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি, কিছু নির্দিষ্ট পণ্যের ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনা হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্যও সহায়ক হতে পারে। তবে, এর কিছু নেতিবাচক প্রভাবও থাকতে পারে, যেমন শুল্ক ফাঁকি ও পণ্যের দাম বাড়ানো।

এক্ষেত্রে, সরকার যদি শুল্কের মাত্রা এবং নীতিমালা বাস্তবসম্মতভাবে বাস্তবায়ন করে, তবে এটি দেশের উন্নয়নে বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে এবং সাধারণ জনগণের জন্যও উপকারিতা নিয়ে আসতে পারে।


Frequently Asked Questions (FAQ)

  1. আবগারি শুল্ক কি?
    • এটি হল সরকার দ্বারা আরোপিত একটি নির্দিষ্ট শুল্ক, যা পণ্য বা সেবার উৎপাদন, পরিবহন অথবা বিক্রয়ের ওপর আরোপিত হয়। এটি সাধারণত মদ, তামাক, অ্যালকোহল, গাড়ি এবং অন্যান্য বিলাসী পণ্যের উপর প্রয়োগ করা হয়।
  2. আবগারি শুল্কের উদ্দেশ্য কি?
    • এর মূল উদ্দেশ্য সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করা, কিছু পণ্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা এবং জনস্বাস্থ্য রক্ষা করা।
  3. বাংলাদেশে কোন পণ্যের ওপর আবগারি শুল্ক আরোপ করা হয়?
    • বাংলাদেশে প্রধানত তামাক, মদ, অ্যালকোহল, প্রিমিয়াম গাড়ি এবং কিছু বিলাসী পণ্যের ওপর আবগারি শুল্ক আরোপ করা হয়।
  4. আবগারি শুল্কের প্রভাব কী?
    • এটি সরকারের রাজস্ব বাড়ায়, তবে এটি পণ্যের দাম বৃদ্ধি করতে পারে এবং ভোক্তাদের ওপর চাপ ফেলতে পারে। এছাড়া, এটি অবৈধ বাজারের প্রসারও ঘটাতে পারে।
  5. আবগারি শুল্কের ভবিষ্যত কি হতে পারে?
    • ভবিষ্যতে, ডিজিটাল পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ এবং পরিবেশবান্ধব পণ্যের প্রতি শুল্ক প্রণালী পরিবর্তন হতে পারে, যা দেশের অর্থনৈতিক নীতি ও বাজার ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top