সূরা ইয়াসিনের বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ: সঠিক তিলাওয়াতের সহজ উপায়

সূরা ইয়াসিনকে কুরআনের হৃদয় বলা হয়। এটি মুসলমানদের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সূরা যা আত্মার শুদ্ধি, পাপমুক্তি এবং আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে সাহায্য করে।
কুরআনের ৩৬তম সূরা হলো সূরা ইয়াসিন এবং সূরাটিতে ৮৩টি আয়াত রয়েছে। এই সূরা মূলত মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এতে তাওহীদ (একত্ববাদ), রিসালাত (প্রেরিত বার্তা) এবং আখিরাতের (পরকালের) কথা তুলে ধরা হয়েছে। অনেক মুসলিম আরবি পড়তে পারেন না, ফলে সঠিক উচ্চারণ এবং অর্থ বুঝতে সমস্যা হয়। তাই বাংলা উচ্চারণ এবং অর্থসহ তিলাওয়াতের প্রয়োজন। এই প্রবন্ধে আমরা সূরা ইয়াসিনের বাংলা উচ্চারণ, সম্পূর্ণ আরবি পাঠ এবং বাংলা অর্থ আলোচনা করব।


সূরা ইয়াসিন: সম্পূর্ণ আরবি পাঠ

নিচে সূরা ইয়াসিনের সম্পূর্ণ আরবি পাঠ তুলে ধরা হলো:

بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیْمِ

يٰسٓ ۚ‏ ١ وَالۡقُرۡاٰنِ الۡحَكِيۡمِ ۙ‏ ٢اِنَّكَ لَمِنَ الۡمُرۡسَلِيۡنَۙ‏ ٣ عَلٰى صِرَاطٍ مُّسۡتَقِيۡمٍؕ‏ ٤ تَنۡزِيۡلَ الۡعَزِيۡزِ الرَّحِيۡمِ ۙ‏ ٥ لِتُنۡذِرَ قَوۡمًا مَّاۤ اُنۡذِرَ اٰبَآؤُهُمۡ فَهُمۡ غٰفِلُوۡنَ‏ ٦ لَقَدۡ حَقَّ الۡقَوۡلُ عَلٰٓى اَكۡثَرِهِمۡ فَهُمۡ لَا يُؤۡمِنُوۡنَ‏ ٧ اِنَّا جَعَلۡنَا فِىۡۤ اَعۡنَاقِهِمۡ اَغۡلٰلًا فَهِىَ اِلَى الۡاَ ذۡقَانِ فَهُمۡ مُّقۡمَحُوۡنَ‏ ٨ وَجَعَلۡنَا مِنۡۢ بَيۡنِ اَيۡدِيۡهِمۡ سَدًّا وَّمِنۡ خَلۡفِهِمۡ سَدًّا فَاَغۡشَيۡنٰهُمۡ فَهُمۡ لَا يُبۡصِرُوۡنَ‏ ٩ وَسَوَآءٌ عَلَيۡهِمۡ ءَاَنۡذَرۡتَهُمۡ اَمۡ لَمۡ تُنۡذِرۡهُمۡ لَا يُؤۡمِنُوۡنَ‏  ١٠اِذۡ اَرۡسَلۡنَاۤ اِلَيۡهِمُ اثۡنَيۡنِ فَكَذَّبُوۡهُمَا فَعَزَّزۡنَا بِثَالِثٍ فَقَالُـوۡۤا اِنَّاۤ اِلَيۡكُمۡ مُّرۡسَلُوۡنَ‏ ١٤ قَالُوۡا مَاۤ اَنۡـتُمۡ اِلَّا بَشَرٌ مِّثۡلُـنَا ۙ وَمَاۤ اَنۡزَلَ الرَّحۡمٰنُ مِنۡ شَىۡءٍۙ اِنۡ اَنۡـتُمۡ اِلَّا تَكۡذِبُوۡنَ‏ ١٥ قَالُوۡا رَبُّنَا يَعۡلَمُ اِنَّاۤ اِلَيۡكُمۡ لَمُرۡسَلُوۡنَ‏ ١٦ وَمَا عَلَيۡنَاۤ اِلَّا الۡبَلٰغُ الۡمُبِيۡنُ‏ ١٧ قَالُـوۡۤا اِنَّا تَطَيَّرۡنَا بِكُمۡۚ لَٮِٕنۡ لَّمۡ تَنۡتَهُوۡا لَنَرۡجُمَنَّكُمۡ وَلَيَمَسَّنَّكُمۡ مِّنَّا عَذَابٌ اَلِيۡمٌ‏ ١٨ قَالُوۡا طٰۤٮِٕـرُكُمۡ مَّعَكُمۡؕ اَٮِٕنۡ ذُكِّرۡتُمۡ ؕ بَلۡ اَنۡـتُمۡ قَوۡمٌ مُّسۡرِفُوۡنَ‏ ١٩ وَجَآءَ مِنۡ اَقۡصَا الۡمَدِيۡنَةِ رَجُلٌ يَّسۡعٰى قَالَ يٰقَوۡمِ اتَّبِعُوا الۡمُرۡسَلِيۡنَۙ‏ ٢٠ءَاَ تَّخِذُ مِنۡ دُوۡنِهٖۤ اٰلِهَةً اِنۡ يُّرِدۡنِ الرَّحۡمٰنُ بِضُرٍّ لَّا تُغۡنِ عَنِّىۡ شَفَاعَتُهُمۡ شَيۡـــًٔا وَّلَا يُنۡقِذُوۡنِ​ۚ‏ ٢٣ اِنِّىۡۤ اِذًا لَّفِىۡ ضَلٰلٍ مُّبِيۡنٍ‏ ٢٤ اِنِّىۡۤ اٰمَنۡتُ بِرَبِّكُمۡ فَاسۡمَعُوۡنِؕ‏ ٢٥ قِيۡلَ ادۡخُلِ الۡجَـنَّةَ ؕ قَالَ يٰلَيۡتَ قَوۡمِىۡ يَعۡلَمُوۡنَۙ‏ ٢٦ بِمَا غَفَرَ لِىۡ رَبِّىۡ وَجَعَلَنِىۡ مِنَ الۡمُكۡرَمِيۡنَ‏ ٢٧ وَمَاۤ اَنۡزَلۡنَا عَلٰى قَوۡمِهٖ مِنۡۢ بَعۡدِهٖ مِنۡ جُنۡدٍ مِّنَ السَّمَآءِ وَمَا كُـنَّا مُنۡزِلِيۡنَ‏ ٢٨ اِنۡ كَانَتۡ اِلَّا صَيۡحَةً وَّاحِدَةً فَاِذَا هُمۡ خٰمِدُوۡنَ‏ ٢٩ يٰحَسۡرَةً عَلَى الۡعِبَادِ ؔ​ۚ مَا يَاۡتِيۡهِمۡ مِّنۡ رَّسُوۡلٍ اِلَّا كَانُوۡا بِهٖ يَسۡتَهۡزِءُوۡنَ‏ ٣٠وَجَعَلۡنَا فِيۡهَا جَنّٰتٍ مِّنۡ نَّخِيۡلٍ وَّاَعۡنَابٍ وَّفَجَّرۡنَا فِيۡهَا مِنَ الۡعُيُوۡنِۙ‏ ٣٤ لِيَاۡكُلُوۡا مِنۡ ثَمَرِهٖ ۙ وَمَا عَمِلَـتۡهُ اَيۡدِيۡهِمۡ​ ؕ اَفَلَا يَشۡكُرُوۡنَ‏  ٣٥ سُبۡحٰنَ الَّذِىۡ خَلَقَ الۡاَزۡوَاجَ كُلَّهَا مِمَّا تُنۡۢبِتُ الۡاَرۡضُ وَمِنۡ اَنۡفُسِهِمۡ وَمِمَّا لَا يَعۡلَمُوۡنَ‏ ٣٦ وَاٰيَةٌ لَّهُمُ الَّيۡلُ ۖۚ نَسۡلَخُ مِنۡهُ النَّهَارَ فَاِذَا هُمۡ مُّظۡلِمُوۡنَۙ‏  ٣٧ وَالشَّمۡسُ تَجۡرِىۡ لِمُسۡتَقَرٍّ لَّهَا ​ؕ ذٰلِكَ تَقۡدِيۡرُ الۡعَزِيۡزِ الۡعَلِيۡمِؕ‏ ٣٨ وَالۡقَمَرَ قَدَّرۡنٰهُ مَنَازِلَ حَتّٰى عَادَ كَالۡعُرۡجُوۡنِ الۡقَدِيۡمِ‏  ٣٩ لَا الشَّمۡسُ يَنۡۢبَغِىۡ لَهَاۤ اَنۡ تُدۡرِكَ الۡقَمَرَ وَلَا الَّيۡلُ سَابِقُ النَّهَارِ​ؕ وَكُلٌّ فِىۡ فَلَكٍ يَّسۡبَحُوۡنَ‏ ٤٠اِلَّا رَحۡمَةً مِّنَّا وَمَتَاعًا اِلٰى حِيۡنٍ‏ ٤٤ وَاِذَا قِيۡلَ لَهُمُ اتَّقُوۡا مَا بَيۡنَ اَيۡدِيۡكُمۡ وَمَا خَلۡفَكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تُرۡحَمُوۡنَ‏ ٤٥ وَمَا تَاۡتِيۡهِمۡ مِّنۡ اٰيَةٍ مِّنۡ اٰيٰتِ رَبِّهِمۡ اِلَّا كَانُوۡا عَنۡهَا مُعۡرِضِيۡنَ‏ ٤٦ وَاِذَا قِيۡلَ لَهُمۡ اَنۡفِقُوۡا مِمَّا رَزَقَكُمُ اللّٰهُ ۙ قَالَ الَّذِيۡنَ كَفَرُوۡا لِلَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَنُطۡعِمُ مَنۡ لَّوۡ يَشَآءُ اللّٰهُ اَطۡعَمَهٗٓ ۖ  اِنۡ اَنۡـتُمۡ اِلَّا فِىۡ ضَلٰلٍ مُّبِيۡنٍ‏ ٤٧ وَيَقُوۡلُوۡنَ مَتٰى هٰذَا الۡوَعۡدُ اِنۡ كُنۡتُمۡ صٰدِقِيۡنَ‏ ٤٨ مَا يَنۡظُرُوۡنَ اِلَّا صَيۡحَةً وَّاحِدَةً تَاۡخُذُهُمۡ وَهُمۡ يَخِصِّمُوۡنَ‏  ٤٩ فَلَا يَسۡتَطِيۡعُوۡنَ تَوۡصِيَةً وَّلَاۤ اِلٰٓى اَهۡلِهِمۡ يَرۡجِعُوۡنَ‏  ٥٠اِنۡ كَانَتۡ اِلَّا صَيۡحَةً وَّاحِدَةً فَاِذَا هُمۡ جَمِيۡعٌ لَّدَيۡنَا مُحۡضَرُوۡنَ‏  ٥٣ فَالۡيَوۡمَ لَا تُظۡلَمُ نَفۡسٌ شَيۡـــًٔا وَّلَا تُجۡزَوۡنَ اِلَّا مَا كُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ‏ ٥٤ اِنَّ اَصۡحٰبَ الۡجَـنَّةِ الۡيَوۡمَ فِىۡ شُغُلٍ فٰكِهُوۡنَ​ۚ‏ ٥٥ هُمۡ وَاَزۡوَاجُهُمۡ فِىۡ ظِلٰلٍ عَلَى الۡاَرَآٮِٕكِ مُتَّكِـــُٔوۡنَ‏ ٥٦ لَهُمۡ فِيۡهَا فَاكِهَةٌ وَّلَهُمۡ مَّا يَدَّعُوۡنَ​ ۖ​ۚ‏ ٥٧ سَلٰمٌ قَوۡلًا مِّنۡ رَّبٍّ رَّحِيۡمٍ‏ ٥٨ وَامۡتَازُوا الۡيَوۡمَ اَيُّهَا الۡمُجۡرِمُوۡنَ‏ ٥٩ اَلَمۡ اَعۡهَدۡ اِلَيۡكُمۡ يٰبَنِىۡۤ اٰدَمَ اَنۡ لَّا تَعۡبُدُوا الشَّيۡطٰنَ​​ۚ اِنَّهٗ لَـكُمۡ عَدُوٌّ مُّبِيۡنٌ ۙ‏ ٦٠اِصۡلَوۡهَا الۡيَوۡمَ بِمَا كُنۡتُمۡ تَكۡفُرُوۡنَ‏ ٦٤ اَلۡيَوۡمَ نَخۡتِمُ عَلٰٓى اَفۡوَاهِهِمۡ وَتُكَلِّمُنَاۤ اَيۡدِيۡهِمۡ وَتَشۡهَدُ اَرۡجُلُهُمۡ بِمَا كَانُوۡا يَكۡسِبُوۡنَ‏ ٦٥ وَلَوۡ نَشَآءُ لَـطَمَسۡنَا عَلٰٓى اَعۡيُنِهِمۡ فَاسۡتَبَقُوا الصِّرَاطَ فَاَنّٰى يُبۡصِرُوۡنَ‏ ٦٦ وَلَوۡ نَشَآءُ لَمَسَخۡنٰهُمۡ عَلٰى مَكَانَتِهِمۡ فَمَا اسۡتَطَاعُوۡا مُضِيًّا وَّلَا يَرۡجِعُوۡنَ‏ ٦٧ وَمَنۡ نُّعَمِّرۡهُ نُـنَكِّسۡهُ فِى الۡخَـلۡقِ​ؕ اَفَلَا يَعۡقِلُوۡنَ‏ ٦٨ وَمَا عَلَّمۡنٰهُ الشِّعۡرَ وَمَا يَنۡۢبَغِىۡ لَهٗؕ اِنۡ هُوَ اِلَّا ذِكۡرٌ وَّقُرۡاٰنٌ مُّبِيۡنٌۙ‏ ٦٩ لِّيُنۡذِرَ مَنۡ كَانَ حَيًّا وَّيَحِقَّ الۡقَوۡلُ عَلَى الۡكٰفِرِيۡنَ‏ ٧٠فَلَا يَحۡزُنۡكَ قَوۡلُهُمۡ​ۘ اِنَّا نَـعۡلَمُ مَا يُسِرُّوۡنَ وَمَا يُعۡلِنُوۡنَ‏  ٧٦ اَوَلَمۡ يَرَ الۡاِنۡسَانُ اَنَّا خَلَقۡنٰهُ مِنۡ نُّطۡفَةٍ فَاِذَا هُوَ خَصِيۡمٌ مُّبِيۡنٌ‏ ٧٧ وَضَرَبَ لَـنَا مَثَلًا وَّ نَسِىَ خَلۡقَهٗ​ ؕ قَالَ مَنۡ يُّحۡىِ الۡعِظَامَ وَهِىَ رَمِيۡمٌ‏ ٧٨ قُلۡ يُحۡيِيۡهَا الَّذِىۡۤ اَنۡشَاَهَاۤ اَوَّلَ مَرَّةٍ​ ؕ وَهُوَ بِكُلِّ خَلۡقٍ عَلِيۡمُ ۙ‏ ٧٩ اۨلَّذِىۡ جَعَلَ لَـكُمۡ مِّنَ الشَّجَرِ الۡاَخۡضَرِ نَارًا فَاِذَاۤ اَنۡـتُمۡ مِّنۡهُ تُوۡقِدُوۡنَ‏ ٨٠اَوَلَيۡسَ الَّذِىۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضَ بِقٰدِرٍ عَلٰٓى اَنۡ يَّخۡلُقَ مِثۡلَهُمۡؕ بَلٰی وَهُوَ الۡخَـلّٰقُ الۡعَلِيۡمُ‏ ٨١ اِنَّمَاۤ اَمۡرُهٗۤ اِذَاۤ اَرَادَ شَیْـًٔـا اَنۡ يَّقُوۡلَ لَهٗ كُنۡ فَيَكُوۡنُ‏  ٨٢ فَسُبۡحٰنَ الَّذِىۡ بِيَدِهٖ مَلَـكُوۡتُ كُلِّ شَىۡءٍ وَّاِلَيۡهِ تُرۡجَعُوۡنَ‏  ٨٣


সূরা ইয়াসিন: সম্পূর্ণ বাংলা উচ্চারণ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

১. ইয়া-সীন।
২. ওয়াল-কুরআনিল-হাকিম।
৩. ইন্নাকা লা-মিনাল-মুরসালীন।
৪. আলা সিরাতিম মুস্তাকিম।
৫. তানযীলাল আজীযির রাহীম।
৬. লিতুন্জিরা কওমাম মা উন্জিরা আ-বা-উহুম ফাহুম গাফিলূন।
৭. লাকাদ হাকাল কাওলু আলা আকছারিহিম ফাহুম লা-ইউমিনূন।
৮. ইন্না জা‘আলনা ফি আ‘না-কিহিম আগলালান ফাহিয়া ইলাল আজকানি ফাহুম মুকমাহূন।
৯. ওয়া জা‘আলনা মিন বাইনি আইদিহিম সাদ্দাও ওয়া মিন খালফিহিম সাদ্দান ফা-আগশাইনাহুম ফাহুম লা-ইউবসিরূন।
১০. ওয়া সাওয়া-উন আলাইহিম আ-আনযারতাহুম আম লাম তুনযিরহুম লা-ইউমিনূন।
১১. ইন্নামা তুনযিরু মানিত্তাবাআ যিকরা ওয়া খশিয়ার রাহমানা বিল গাইবি ফা-বাশশিরহু বিগফিরাতিন ওয়া আজরিন কারিম।
১২. ইন্না নাহনু নুহ্যিল-মাওতা ওয়া নাকতুবু মা কাদ্দামু ওয়া আসারাহুম। ওয়া কুল্লা শাই-ইন আহসাইনাহু ফি ইমামিম মুবিন।
১৩. ওয়াদরিব লাহুম মাসালান আসহাবাল কারইয়াতি ইয জা-আহাল মুরসালুন।
১৪. ইয আর্সালনা ইলাইহিমুছনাইনি ফাকাজ্জাবুহুমা ফা-আজ্জাযনা বিছালিছিন ফাকালু ইন্না ইলাইকুম মুরসালুন।
১৫. কালু মা আনতুম ইল্লা বাশারুম মিছলুনা ওয়া মা আঞ্জালার রাহমানু মিন শাই-ইন ইন আন্তুম ইল্লা তাকযিবুন।
১৬. কালু রাব্বুনা ইয়া‘লামু ইন্না ইলাইকুম লা-মুরসালুন।
১৭. ওয়া মা আলাইনা ইল্লাল বালাগুল মুবিন।
১৮. কালু ইন্না তাতাইয়ারনা বিকুম লা-ইন লাম তান্তাহু লানারজুমান্নাকুম ওয়া লাইয়ামাসসান্নাকুম মিননা আযাবুন আলিম।
১৯. কালু তায়িরুকুম মা‘আকুম আ-ইন যুক্কিরতুম। বাল অন্তুম কওমুম মুসরিফুন।
২০. ওয়া জা-আ মিন আকসাল মাদিনাতি রাজুলুন ইয়াস‘আ। কালা ইয়া কওমিত্তাবিঊল মুরসালিন।
২১. ইত্তাবিঊ মান লা ইয়াসআলুকুম আজরাঁওওয়া হুম মুহতাদুন।
২২. ওয়া মালিয়া লা আ’বুদুল্লাযি ফাতারানি ওয়া ইলাইহি তুরজাউন।
২৩. আ-আত্তাখিযু মিন দুনিহি আ-লিহাতান ইন ইউরিদনির রাহমানু বিদুররিল লা তুউনি আননি শাফা-আতুহুম শাই-আউওয়া লা-ইউনকিযুন।
২৪. ইন্নি ইযাল লাফি দালালিম মুবিন।
২৫. ইন্নি আমান্তু বিরাব্বিকুম ফাসমাউন।
২৬. কিলাদখুলিল জান্নাতা। কালা ইয়া লাইতা কওমি ইয়া‘লামুন।
২৭. বিছ মাগফিরা লি রাব্বি ওয়া জা‘আলানি মিনাল মুকরামিন।

২৮. ওয়া মা আঞ্জালনা আলা কওমিহি মিম্‌ বাদিহি মিন্‌ জুন্‌দিম্‌ মিনাস্‌ সামা-ই ওয়া মা কুন্না মুনযিলিন।

২৯. ইন্‌ কানাত্‌ ইল্লা সাইহাতাও ওয়াহিদাতান্‌ ফাইযা হুম্‌ খাবিদুন।

৩০. ইয়া হাসরাতান্‌ আলাল্‌ ইবাদি, মা ইয়াতিহিম্‌ মির্‌ রাসুলিন্‌ ইল্লা কানু বিহি ইয়াসতাহজিউন।

৩১. আ-লাম্‌ ইয়ারাও কাম্‌ আহলাকনা কাবলাহুম্‌ মিনাল্‌ কুরুনি অন্নাহুম্‌ ইলাইহিম্‌ লা ইয়ারজিউন।

৩২. ওয়া ইন্‌ কুল্লু লাম্মা জামিউনা লাদৈনা মুহদারুন।

৩৩. ওয়া আয়াতুল্লাহুমুল্‌ আরদু মাইতাতু আহ্যাইনাহা ওয়া আখরাজনা মিনহা হাববান্‌ ফামিন্‌হু ইয়াকুলুন।

৩৪. ওয়া জা‘আলনা ফিহা জান্নাতিম্‌ মিন্‌ নাখীলিন্‌ ওয়া আ‘নাবিন্‌ ওয়া ফাজ্‌জারনা ফিহা মিনাল্‌ উইউন।

৩৫. লিইয়াকুলু মিন্‌ সামারিহি ওয়া মা আমিলাত্‌হু আইদিহিম্‌; আফালা ইয়াশকুরুন।

৩৬. সুবহানাল্লাজি খলাকাল্‌ আজওয়াজা কুল্লাহা মিম্মা তুমবিতুল্‌ আরদু ওয়া মিন্‌ আন্‌ফুসিহিম্‌ ওয়া মিম্মা লা ই‘আলামুন।

৩৭. ওয়া আয়াতুল্লাহুমুল্‌ লাইলু নাসলাখু মিনহুন্নাহারা ফাইযা হুম্‌ মুয্‌লিমুন।

৩৮. ওয়া শামসু তাজ্রি লিমুসতাকারিল্লাহা; যালিকা তাকদিরুল্‌ আজিজিল্‌ আলিম।

৩৯. ওয়াল্‌ কামারা কাদ্দারনাহু মানাজিলা হত্তা আ‘দাকা ল‘উনুজুনিল্‌ কাদিম।

৪০. লাশ্‌ শামসু ইয়ামবাগি লাহা আন্‌ তুদরিকাল্‌ কামারা ওয়ালা লাইলু সাবিকুন্‌ নাহার; ওয়া কুল্লু ফি ফালাকিন্‌ ইয়াসবাহুন।

৪১. ওয়া আয়াতুল্লাহুম্‌ আন্না হামালনা জুরিয়্যাতাহুম্‌ ফিল্‌ ফুলকিল্‌ মাশহুন।

৪২. ওয়া খালাকনা লাহুম্‌ মিম্‌ মিছলিহি মা ইয়ারকবুন।

৪৩. ওয়া ইন্‌ নাশা নুঘরিকহুম্‌ ফালা সারিখা লাহুম্‌ ওয়া লা হুম্‌ ইউনকাযুন।

৪৪. ইল্লা রহমাতাম্‌ মিন্‌না ওয়া মাতা‘আন্‌ ইলাহিন।

৪৫. ওয়া ইজা কিলা লাহুমুত্তাকু মা বাইনা আইদিকুম্‌ ওয়া মা খালফাকুম্‌ লাআল্লাকুম্‌ তুরহামুন।

৪৬. ওয়া মা তাতিহিম্‌ মিন্‌ আয়াতিম্‌ মিন আয়াতি রাব্বিহিম্‌ ইল্লা কানু আন্হা মু’রিদিন।

৪৭. ওয়া ইজা কিলা লাহুম্‌ আনফিকু মিম্মা রাযাকাকুমুল্লাহু, কালাল্লাজিনা কাফারু লিল্লাজিনা আমানু আনুতইমু মান লাও ইয়াশাউল্লাহু আত‘আমাহু, ইন্‌ আনতুম্‌ ইল্লা ফি দালালিম্‌ মুবিন।

৪৮. ওয়া ইয়াকুলুনা মাতা হাজাল্‌ ওয়াদু ইন্‌ কুনতুম্‌ সাদিকিন।

৪৯. মা ইয়ানযুরুনা ইল্লা সাইহাতান্‌ ওয়াহিদাতান্‌ তাখুঝুহুম্‌ ওহুম্‌ ইয়াখসিমুন।

৫০. ফালা ইয়াস্তাতিয়াউন তাওসিয়াতাওওয়া লা ইলা আহলিহিম্‌ ইয়ারজিউন।

৫১. ওয়া নুফিখা ফিস্‌ সুরি ফাইযা হুম্‌ মিনাল্‌ আজদাছি ইলা রাব্বিহিম্‌ ইয়ানসিলুন।

৫২. কালু ইয়া ওয়াইলানা মান্‌ বাহাছানা মিম্‌ মারকাদিনা; হাযা মা ওয়াআর রাহমানু ওয়া সাদাকাল মুরসালুন।

৫৩. ইন কানাৎ ইল্লা সাইহাতাও ওয়াহিদাতান ফাইযা হুম জামিউনা লাদাইনা মুহদারুন।

৫৪. ফাল ইয়াওমা লা তুজলামু নাফসুন শাইআওয়া লা তুজ্জাউনা ইল্লা মা কুনতুম তামালুন।

৫৫. ইন্না আসহাবাল জান্নাতি ইয়াওমা ফি শুগুলিন ফাকিহুন।

৫৬. হুম ওয়া আজওয়াজুহুম ফি জিলালিন আলাল আরাইকি মুততাকিউন।

৫৭. লাহুম ফিহা ফাকিহাতুন ওয়ালাহুম মা ইয়াদ্দাউন।

৫৮. সালামুন কাওলাম মিন রাব্বির রহিম।

৫৯. ওয়ামতাযু ইয়াওমা আইয়ুহাল মুজরিমুন।

৬০. আ-লাম আহাদ ইলাইকুম ইয়াবানি আদমা আল্লা তা’বুদুশ শাইতান।

৬১. ইন্নাহু লাকুম আদুউম্‌ মুবিন।

৬২. ওয়া আন্নি’বুদুনি হা-যা সিরাতুম মুসতাকিম।

৬৩. ওয়ালাকাদ আযল্লা মিনকুম জিবিলান কাছিরান, আফা-লাম তাকুনু তা’কিলুন।

৬৪. হা-যি হি জাহান্নামুল্লাতি কুনতুম তুআ’দুন।

৬৫. ইসলাউহাল ইয়াওমা বিমা কুনতুম তাকফুরুন।

৬৬. আল ইয়াওমা নাখতিমু আলা আফ্ওয়াহিহিম, ওয়াতুকাল্লিমুনা আইদিহিম, ওয়াতাশহাদু আরজুলুহুম বিমা কানু ইয়াকসিবুন।

৬৭. ওয়ালাও নাশাউ লাতামাসনা আলা আইউনিহিম ফাসতাবাকুস সিরাতা ফা-আন্না ইয়ুবসিরুন।

৬৮. ওয়ালাও নাশাউ লামাসাখনাহুম আলা মাকানাতিম ফামাস্তাতা’উ মুদিইয়াও ওয়ালা ইয়ারজিউন।

৬৯. ওয়া মাআলামনাহুশ শিআরা ওয়ামা ইয়াম্বাগি লাহু, ইন হুয়া ইল্লা জিকরাও ওয়া কুরআনুম মুবিন।

৭০. লিইউনযিরা মান কানা হাইয়াও ওয়া ইয়াহিকাল কাওলু আলাল কাফিরিন।

৭১. আ-ওয়ালাম ইয়ারাউ আন্না খালাকনা লাহুম মিম্মা আমিলত আইদিনা আন’আমান ফাহুম লাহা মালিকুন।

৭২. ওয়া যল্লালনাহা লাহুম ফামিনহা রাকুবুহুম ওয়া মিনহা ইয়াকুলুন।

৭৩. ওয়া লাহুম ফিহা মানাফিউ ওয়া মাশারিবু, আফালা ইয়াশকুরুন।

৭৪. ওয়াত্তাখাযু মিন দুনিল্লাহি আলিহাতান লা’আল্লাহুম ইউনসারুন।

৭৫. লা ইয়াসতাতিউনা নাসরাহুম, ওয়া হুম লাহুম জুনদুম মুহযারুন।

৭৬. ফালা ইয়াহযুনকা কাওলুহুম, ইন্না না’আলামু মা ইউসিরুনা ওয়া মা ইউলিনুন।

৭৭. আ-ওয়ালাম ইয়ারা আল ইনসানু আন্না খালাকনাহু মিন নুতফাতিন ফাইযা হুয়া খাসিমুম মুবিন।

৭৮. ওয়া দারাবা লানা মাসালাওওয়া নাসিয়া খালকাহু, কালা মান ইউহিইল ইযামা ওয়া হিয়া রামিম।

৭৯. কুল ইউহিইহাল্লাযি আনশআহা আওয়ালা মাররাতিন, ওয়া হুয়া বিকুল্লি খালকিন আলিম।

৮০. আল্লাযি জা’আলা লাকুম মিনাশ শাজারিল আখযারি নারাও ফাইযা আনতুম মিনহু তুকিদুন।

৮১. আ-ওয়ালাইসাল্লাযি খালাকাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদা বিকাদিরিন আলা আয়াখলুকা মিছলাহুম, বালা ওয়া হুয়াল খাল্লাকুল আলিম।

৮২. ইন্নামা আমরুহু ইযা আরাদা শাইআন আন ইয়াকুলা লাহু কুন ফাইয়াকুন।

৮৩. ফাসুবহানাল্লাযি বিয়াদিহি মালাকুতু কুল্লি শাই-ইউন ওয়া ইলাইহি তুরজাউন।

সূরা ইয়াসিন: সম্পূর্ণ বাংলা অর্থ (আয়াত ১-৮৩)


১. ইয়া-সীন।
২. প্রজ্ঞাময় কুরআনের শপথ।
৩. নিশ্চয়ই তুমি রাসূলদের অন্তর্ভুক্ত।
৪. একটি সরল পথে।
৫. এটি পরাক্রমশালী, দয়ালু আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ।
৬. যেন তুমি এমন এক জাতিকে সতর্ক কর, যাদের পূর্বপুরুষদের সতর্ক করা হয়নি, তাই তারা গাফিল।
৭. অবশ্যই তাদের অধিকাংশের ওপর শাস্তির ঘোষণা প্রযোজ্য হয়েছে, ফলে তারা ঈমান আনে না।
৮. আমি তাদের গলায় শৃঙ্খল দিয়েছি, যা তাদের চিবুক পর্যন্ত পৌঁছে গেছে, ফলে তাদের মাথা ওপরে উঠে আছে।
৯. এবং আমি তাদের সামনের দিকে ও পিছনের দিকে একটি প্রাচীর তৈরি করেছি এবং তাদের ঢেকে দিয়েছি, তাই তারা দেখতে পায় না।
১০. তাদের জন্য একই কথা, তুমি তাদের সতর্ক করো বা না করো, তারা ঈমান আনবে না।
১১. তুমি কেবল তাদেরই সতর্ক করতে পার, যারা উপদেশ অনুসরণ করে এবং অদৃশ্যভাবে দয়াময় আল্লাহকে ভয় করে। তাদের তুমি মাগফিরাত এবং মহৎ প্রতিফল দাও।
১২. নিশ্চয়ই আমরা মৃতদের জীবিত করি এবং তারা যা প্রেরণ করেছে এবং যা পিছনে রেখেছে তা লিখে রাখি। আমরা সবকিছু এক সুস্পষ্ট নথিতে সংরক্ষণ করেছি।
১৩. তাদের জন্য একটি উপমা দাও: শহরের লোকদের গল্প, যখন তাদের কাছে রাসূলরা এসেছিলেন।
১৪. আমি তাদের কাছে দুইজন রাসূল পাঠিয়েছিলাম, কিন্তু তারা তাদের মিথ্যা বলেছিল। তারপর আমি তৃতীয় একজনকে পাঠিয়েছিলাম, এবং তারা বলেছিল, “আমরা তোমাদের কাছে প্রেরিত।”
১৫. তারা বলল, “তোমরা তো আমাদের মতোই মানুষ এবং দয়াময় আল্লাহ কিছুই অবতীর্ণ করেননি। তোমরা মিথ্যাবাদী ছাড়া আর কিছু নও।”
১৬. তারা বলল, “আমাদের প্রভু জানেন যে আমরা তোমাদের কাছে প্রেরিত।
১৭. এবং আমাদের দায়িত্ব হলো কেবল স্পষ্টভাবে বার্তা পৌঁছে দেওয়া।”
১৮. তারা বলল, “আমরা তোমাদের জন্য অশুভ মনে করি। যদি তোমরা থামো না, তাহলে আমরা অবশ্যই তোমাদের পাথর মেরে হত্যা করব এবং আমাদের পক্ষ থেকে তোমাদের ওপর কঠিন শাস্তি আসবে।”
১৯. তারা বলল, “তোমাদের দুর্ভাগ্য তোমাদের সাথেই। যদি তোমরা সতর্ক করা হয়, তা কি দুর্ভাগ্য? বরং তোমরা সীমালঙ্ঘনকারী জাতি।”

২০. শহরের দূর প্রান্ত থেকে এক ব্যক্তি দৌড়ে এসে বলল, “হে আমার জাতি, তোমরা রাসূলদের অনুসরণ করো।”

২১. “তোমরা তাদের অনুসরণ করো যারা তোমাদের কাছে কোনো প্রতিদান চায় না এবং যারা সৎপথে রয়েছে।”

২২. “আমি কেন সেই সত্ত্বার ইবাদত করব না, যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং যার দিকে তোমাদের ফিরে যেতে হবে?”

২৩. “আমি কি তাকে বাদ দিয়ে অন্য উপাস্য গ্রহণ করব? যদি দয়াময় আল্লাহ আমার জন্য কোনো কষ্ট করতে চান, তবে তাদের সুপারিশ আমাকে কোনো উপকার করবে না এবং তারা আমাকে রক্ষা করতে পারবে না।”

২৪. “তাহলে নিশ্চয়ই আমি প্রকাশ্য বিভ্রান্তিতে পড়ে যাব।”

২৫. “আমি তোমাদের প্রভুর প্রতি ঈমান এনেছি। এখন তোমরা আমার কথা শোন।”

২৬. তাকে বলা হলো, “জান্নাতে প্রবেশ করো।” সে বলল, “হায়! আমার জাতি যদি জানত!”

২৭. “আমার প্রভু আমাকে ক্ষমা করেছেন এবং আমাকে সম্মানিতদের মধ্যে স্থান দিয়েছেন।”

২৮. তার পরে আমি তার জাতির ওপর কোনো বাহিনী পাঠাইনি আকাশ থেকে, এবং আমি কখনো পাঠাতেও ছিলাম না।

২৯. এটি ছিল কেবল একটি ভয়ংকর আওয়াজ এবং তারা নিস্তব্ধ হয়ে গেল।

৩০. হায় আফসোস সেই বান্দাদের জন্য! তাদের কাছে যখনই কোনো রাসূল এসেছে, তারা তাকে উপহাস করেছে।

৩১. তারা কি দেখেনি, আমি তাদের আগে কত প্রজন্মকে ধ্বংস করেছি? তারা তাদের কাছে ফিরে আসে না।

৩২. তাদের সবাই একত্রে আমার সামনে উপস্থিত হবে।

৩৩. মৃত জমিন তাদের জন্য একটি নিদর্শন। আমি এটি জীবিত করেছি এবং এর থেকে শস্য বের করেছি, যা তারা খায়।

৩৪. আমি এতে খেজুর গাছ ও আঙ্গুরের বাগান তৈরি করেছি এবং এর মধ্যে ঝরনা প্রবাহিত করেছি।

৩৫. যাতে তারা এর ফল খেতে পারে। এটি তাদের হাতের তৈরি নয়। তারা কি কৃতজ্ঞ হবে না?

৩৬. তিনি পবিত্র যিনি সকল জোড়া সৃষ্টি করেছেন—যা জমিন উৎপন্ন করে, তাদের নিজেদের মধ্য থেকে এবং যা তারা জানে না।

৩৭. তাদের জন্য আরেকটি নিদর্শন হলো রাত। আমি এর থেকে দিন সরিয়ে নিই, ফলে তারা অন্ধকারে থাকে।

৩৮. সূর্য নিজ গতিপথে চলে। এটি পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞের নির্ধারণ।

৩৯. চাঁদের জন্য আমি বিভিন্ন অবস্থান নির্ধারণ করেছি, যতক্ষণ না এটি পুরনো খেজুর পাতার মতো হয়ে যায়।

৪০. সূর্য কখনো চাঁদকে ধরা দিতে পারে না এবং রাত কখনো দিনের আগে আসতে পারে না। প্রত্যেকে নিজ নিজ কক্ষপথে চলতে থাকে।

৪১. তাদের জন্য একটি নিদর্শন হলো, আমি তাদের বংশধরদের বোঝাই করা নৌকায় পরিবহন করি।

৪২. আমি তাদের জন্য এর মতো আরও পরিবহন ব্যবস্থা সৃষ্টি করেছি, যাতে তারা আরোহণ করে।

৪৩. আমি যদি ইচ্ছা করি, আমি তাদের নিমজ্জিত করতে পারি, তখন কেউ তাদের সাহায্য করতে পারবে না, এবং তারা উদ্ধারও পাবে না।

৪৪. কেবল আমার করুণা এবং নির্ধারিত সময় পর্যন্ত তাদের উপভোগ করার সুযোগ।

৪৫. যখন তাদের বলা হয়, “তোমাদের সামনে এবং পিছনে যা আছে তা থেকে সাবধান হও, যাতে তোমাদের প্রতি দয়া করা হয়।”

৪৬. তাদের কাছে তাদের প্রভুর কোনো নিদর্শন আসলেই তারা তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।

৪৭. যখন তাদের বলা হয়, “তোমাদের প্রভু যে জীবিকা দিয়েছেন, তা থেকে ব্যয় করো,” তখন যারা অবিশ্বাস করে তারা মুমিনদের বলে, “আমরা কি তাকে খাওয়াব, যাকে আল্লাহ খাওয়াতে চাইলে খাওয়াতেন? তোমরা শুধু প্রকাশ্য বিভ্রান্তিতে রয়েছ।

৪৮. তারা বলে, “এই প্রতিশ্রুতি কখন পূরণ হবে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও?”

৪৯. তারা কেবল একটি ভয়ংকর আওয়াজের অপেক্ষায় থাকে, যা তাদের বিতর্ক করার সময় তাদের গ্রাস করবে।

৫০. তখন তারা কোনো নির্দেশও দিতে পারবে না এবং তাদের পরিবারেও ফিরে যেতে পারবে না।

৫১. এবং শিঙ্গায় ফুঁ দেয়া হবে, তখন তারা কবর থেকে দ্রুত উঠে তাদের প্রভুর দিকে চলবে।

৫২. তারা বলবে, “হায় আমাদের! কে আমাদের আমাদের শয়ানস্থান থেকে উঠিয়ে আনল? এটি তো দয়াময় আল্লাহর প্রতিশ্রুতি এবং রাসূলগণ সত্য বলেছিলেন।”

৫৩. এটি হবে কেবল একটি ভয়ংকর আওয়াজ, তখন তারা সবাই আমার সামনে উপস্থিত হবে।

৫৪. আজ কোনো আত্মার প্রতি কোনো অবিচার করা হবে না এবং তোমাদের কেবল তোমাদের কৃতকর্মের প্রতিদান দেয়া হবে।

৫৫. নিশ্চয়ই, আজ জান্নাতবাসীরা আনন্দে মগ্ন থাকবে।

৫৬. তারা এবং তাদের সঙ্গিনীরা ছায়ায় আরামদায়ক স্থানে বিশ্রাম নেবে।

৫৭. তাদের জন্য সেখানে ফল থাকবে এবং তাদের যা ইচ্ছা, তাই তারা পাবে।

৫৮. “সালাম,” একটি বাক্য, তাদের দয়াময় প্রভুর পক্ষ থেকে।

৫৯. (আল্লাহ বলবেন,) “তোমরা, হে অপরাধীরা, আজ পৃথক হয়ে যাও।”

৬০. “হে আদম সন্তানেরা, আমি কি তোমাদের নির্দেশ দেইনি যে শয়তানের ইবাদত করবে না? সে তো তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।”

৬১. “এবং আমার ইবাদত কর, এটাই সরল পথ।”

৬২. “সে তো তোমাদের অনেককে পথভ্রষ্ট করেছে। তোমরা কি বুঝতে পারনি?”

৬৩. “এই সেই জাহান্নাম, যা তোমাদের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল।”

৬৪. “আজ এর মধ্যে প্রবেশ কর, কারণ তোমরা অবিশ্বাসী ছিলে।”

৬৫. আজ আমি তাদের মুখ বন্ধ করে দেব এবং তাদের হাত আমার সাথে কথা বলবে, আর তাদের পা সাক্ষ্য দেবে তারা কী করত।

৬৬. আমি যদি ইচ্ছা করি, তাদের চোখ অন্ধ করে দিতে পারি। তখন তারা পথ খুঁজবে, কিন্তু তারা কীভাবে দেখতে পাবে?

৬৭. আমি যদি ইচ্ছা করি, তাদের স্থানেই তাদের রূপান্তর করতে পারি। তখন তারা না এগোতে পারবে, না ফিরে যেতে পারবে।

৬৮. যার বয়স দীর্ঘ হয়, আমি তাকে সৃষ্টি ও শক্তিতে পরিবর্তন করি। তারা কি বোঝে না?

৬৯. আমি তাকে কবিতা শেখাইনি এবং এটি তার জন্য উপযুক্তও নয়। এটি কেবল একটি উপদেশ এবং সুস্পষ্ট কুরআন।

৭০. যাতে সে তাদের সতর্ক করতে পারে যারা জীবিত এবং অবিশ্বাসীদের প্রতি শাস্তির কথা প্রমাণ করতে পারে।

৭১. তারা কি দেখে না যে আমি তাদের জন্য আমার হাতে সৃষ্ট গবাদি পশু সৃষ্টি করেছি, এবং তারা এর মালিক হয়েছে?

৭২. আমি এগুলোকে তাদের বশীভূত করেছি; তাদের কিছুতে তারা আরোহণ করে এবং কিছু তারা খায়।

৭৩. তাদের জন্য এগুলোতে রয়েছে বিভিন্ন উপকারিতা এবং পানীয়। তারা কি কৃতজ্ঞ হবে না?

৭৪. তারা আল্লাহ ছাড়া অন্যকে উপাস্য হিসেবে গ্রহণ করেছে, যাতে তারা সাহায্য পায়।

৭৫. তারা তাদের সাহায্য করতে পারে না; বরং তারা তাদের জন্য প্রস্তুত সৈন্য।

৭৬. তুমি তাদের কথায় দুঃখিত হয়ো না। আমি যা তারা গোপন করে এবং যা প্রকাশ করে, তা সবই জানি।

৭৭. মানুষ কি দেখে না যে আমি তাকে বীর্য থেকে সৃষ্টি করেছি? অথচ এখন সে আমার বিরুদ্ধে প্রকাশ্য বিতর্ক করে।

৭৮. সে আমার জন্য উদাহরণ দেয় এবং নিজের সৃষ্টি ভুলে যায়। সে বলে, “কীভাবে হাড় জীবিত করা হবে যখন এটি পচে গেছে?”

৭৯. বলে দাও, “যিনি প্রথমবার এটি সৃষ্টি করেছেন, তিনিই এটিকে পুনরুজ্জীবিত করবেন। তিনি সকল সৃষ্টির ব্যাপারে সর্বজ্ঞ।”

৮০. যিনি সবুজ গাছ থেকে তোমাদের জন্য আগুন তৈরি করেছেন, যার মাধ্যমে তোমরা আগুন জ্বালাও।

৮১. তিনি কি আকাশমণ্ডলী এবং পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি তাদের মতো আরেকটি সৃষ্টি করতে অক্ষম? অবশ্যই তিনি সক্ষম। তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ স্রষ্টা, সর্বজ্ঞ।

৮২. যখন তিনি কোনো কিছুর ইচ্ছা করেন, তিনি কেবল বলেন, “হও,” তখনই তা হয়ে যায়।

৮৩. তাই তিনি পবিত্র, যাঁর হাতে রয়েছে সবকিছুর মালিকানা এবং তাঁর কাছেই তোমরা ফিরে যাবে।

আরও পড়ুন: আয়াতুল কুরসি: আল্লাহর ক্ষমতা ও সৃষ্টির সর্বোচ্চ নির্দেশনার প্রতীক

উপসংহার

সূরা ইয়াসিন কুরআনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি সূরা, যাকে “কুরআনের হৃদয়” বলা হয়। এই সূরার প্রতিটি আয়াত আমাদের জীবনের শিক্ষা দেয় এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, দয়া এবং আনুগত্যের গুরুত্ব তুলে ধরে। এর তিলাওয়াত শুধু ইবাদত নয়, বরং আমাদের আত্মার শুদ্ধি এবং দুনিয়া ও আখিরাতের সফলতার মাধ্যম।

যারা আরবি উচ্চারণে দুর্বল, তাদের জন্য বাংলা উচ্চারণ এবং অর্থ বুঝে তিলাওয়াত করা অনেক বড় সহায়ক। তবে সঠিক উচ্চারণ বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি, কারণ কুরআনের অর্থের পরিবর্তন হলে তা বড় ভুল হতে পারে। তাই বাংলা উচ্চারণ শেখার পাশাপাশি একজন অভিজ্ঞ শিক্ষক বা নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে সহায়তা নেওয়া উচিত।

এই প্রবন্ধে সূরা ইয়াসিনের সম্পূর্ণ আরবি, বাংলা উচ্চারণ এবং অর্থ উপস্থাপন করা হয়েছে, যাতে আপনাদের জন্য এটি সহজ এবং বোধগম্য হয়। আশা করি, এটি আপনাদের আল্লাহর বাণী বুঝতে এবং জীবনে প্রয়োগ করতে সাহায্য করবে।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে সূরা ইয়াসিনের শিক্ষা গ্রহণ করার এবং তাঁর পথে সঠিকভাবে চলার তৌফিক দিন। আমিন।

আপনার কোনো পরামর্শ বা সংশোধনের প্রয়োজন হলে জানাতে দ্বিধা করবেন না। আল্লাহ হাফিজ।

সূরা ইয়াসিনের বাংলা উচ্চারণ যদি এই বিষয়ে আপনার কোনো প্রশ্ন থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে নিচে মন্তব্য করুন। পোস্টটি যদি তথ্যবহুল মনে হয়, তবে এটি আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top