বেরিবেরি রোগ কি? এর কারণ, উপসর্গ ও চিকিৎসা বিস্তারিত জানুন

mybdhelp.com-বেরিবেরি রোগ কি
ছবি : MyBdhelp গ্রাফিক্স

বেরিবেরি রোগ কি, বেরিবেরি রোগ হল একটি ভিটামিন বি১ (থায়ামিন) অভাবজনিত রোগ, যা শরীরের বিভিন্ন অংশে প্রভাব ফেলে, যেমন স্নায়ু, হৃৎপিণ্ড এবং পেশী।
এটি মূলত অপুষ্টির কারণে ঘটে, বিশেষত যখন শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে থায়ামিন সরবরাহ না হয়। বেরিবেরি একটি প্রাচীন রোগ, যা সাধারণত খাদ্যাভ্যাসের অবহেলা এবং নির্দিষ্ট পুষ্টির অভাবে দেখা দেয়।

বেরিবেরি রোগের পরিচয় ও গুরুত্ব
এটি একটি রোগ যা স্নায়ু, পেশী এবং হৃৎপিণ্ডের কার্যকারিতাকে গুরুতরভাবে প্রভাবিত করে। যদি এটি সময়মতো চিকিৎসা না করা হয়, তবে এটি মানুষের জীবনকেও বিপদে ফেলতে পারে। কিছুটা ইতিহাসের দিকে তাকালে, বেরিবেরি রোগ ছিল এক সময় এমন একটি রোগ যা গরিব দেশে সবচেয়ে বেশি দেখা যেত। তবে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি এবং পুষ্টির উপর সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে এখন এটি কিছুটা কমে গেছে। কিন্তু এখনও বাংলাদেশে, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে, এই রোগের প্রকোপ দেখা যায়।


বেরিবেরি রোগের কারণসমূহ (Causes of Beriberi Disease)

এই রোগের প্রধান কারণ হল থায়ামিনের অভাব, যা সাধারণত অপুষ্টি, একপেশে খাদ্যাভ্যাস  অথবা দীর্ঘকাল ধরে শর্করা নির্ভর খাদ্য গ্রহণের ফলে ঘটে।
থায়ামিন, যা ভিটামিন বি১ নামেও পরিচিত, আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি বিশেষত স্নায়ু এবং পেশী ফাংশনকে সমর্থন করে এবং শক্তি উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। থায়ামিনের অভাব হলে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ-প্রতঙ্গ সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না।

থায়ামিনের অভাব কেন হয়?

থায়ামিনের অভাব হওয়ার প্রধান কারণ হলো অপুষ্টি এবং খাদ্যাভ্যাসের দুর্বলতা। আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যে যদি থায়ামিনের পরিমাণ কম থাকে, তবে এটি শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
বিশেষ করে এমন কিছু খাদ্যাভ্যাস, যেখানে একপেশে শর্করা-ভিত্তিক খাদ্য (যেমন সাদা চাল, মিষ্টান্ন) বেশি খাওয়া হয়, সেখানে থায়ামিনের অভাব দেখা দিতে পারে। বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে যেখানে খাদ্যের বৈচিত্র্য কম, সেখানে এই রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায়।


বেরিবেরি রোগের উপসর্গ (Symptoms of Beriberi)

বেরিবেরি রোগের উপসর্গগুলির মধ্যে হৃৎপিণ্ডের সমস্যা, পেশীতে দুর্বলতা, হাঁটাচলার সমস্যা এবং স্নায়ু সমস্যার অন্তর্ভুক্ত।
এই রোগের উপসর্গ দুটি প্রধান শ্রেণীতে ভাগ করা যায়: শুষ্ক বেরিবেরি এবং ভেজা বেরিবেরি। প্রতিটি ধরনের রোগের উপসর্গ আলাদা এবং তার জন্য চিকিৎসাও ভিন্ন হতে পারে।

শুষ্ক বেরিবেরি (Dry Beriberi)

শুষ্ক বেরিবেরি হলে, রোগী সাধারণত পেশীতে দুর্বলতা এবং স্নায়ুজনিত সমস্যা অনুভব করেন। হাঁটাচলার সময় সমস্যা হতে পারে এবং পেশীতে ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
এটি মূলত স্নায়ু প্রভাবিত সমস্যা। পেশীতে শক্তি কমে যায় এবং হাঁটাচলার ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। শুষ্ক বেরিবেরি একটি ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রক্রিয়া, যেখানে রোগী দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকলেও ঠিকমতো চিকিৎসা না পেলে রোগ আরও গুরুতর হতে থাকে।

ভেজা বেরিবেরি (Wet Beriberi)

ভেজা বেরিবেরি মূলত হৃৎপিণ্ড এবং পানির ধারণের সমস্যা নিয়ে আসে। এর ফলে শরীরে অতিরিক্ত পানি জমে যেতে পারে (অ্যাডিমা) এবং হৃদরোগের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এটি দ্রুত প্রসারিত হতে পারে এবং এটি সাধারণত হৃদরোগ এবং শ্বাসকষ্ট সৃষ্টি করে, যা যদি চিকিৎসা না করা হয় তবে জীবনহানির কারণ হতে পারে।

বেরিবেরি রোগের চিকিৎসা (Treatment of Beriberi)

থায়ামিনের অভাব পূরণ করতে ভিটামিন বি১ এর সাপ্লিমেন্ট এবং সুষম খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।
বেরিবেরি রোগের চিকিৎসা মূলত থায়ামিনের অভাব পূরণ করতে এবং সঠিক পুষ্টির সরবরাহ নিশ্চিত করতে হয়। চিকিৎসকরা সাধারণত ভিটামিন বি১ সাপ্লিমেন্ট দেওয়ার পরামর্শ দেন, যা রোগীর শরীরে থায়ামিনের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। তবে, শুধু সাপ্লিমেন্টই যথেষ্ট নয়, এর সাথে সুষম খাদ্য গ্রহণও জরুরি।

থায়ামিন সাপ্লিমেন্ট

থায়ামিন সাপ্লিমেন্টগুলি অনেক ধরনের হয়, যার মধ্যে থায়ামিন হাইড্রোক্লোরাইড এবং থায়ামিন পিরোফসফেট প্রধান। এগুলি সাধারনত ট্যাবলেট বা ইনজেকশন আকারে পাওয়া যায়। তবে, সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত, কারণ অতিরিক্ত থায়ামিনও শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

সুষম খাদ্য

বেরিবেরি রোগের চিকিৎসায় সুষম খাদ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। থায়ামিন সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে—

  • চাল (বিশেষ করে ব্রাউন রাইস),
  • বাদাম,
  • মটরশুটি,
  • মাছ,
  • মাংস (যেমন মুরগি),
  • ডাল এবং
  • ডিম
    এগুলি থায়ামিনের অভাব পূরণ করতে সাহায্য করে এবং শরীরকে শক্তি দেয়।

চিকিৎসার সময়সীমা

থায়ামিন সাপ্লিমেন্ট এবং সুষম খাদ্য গ্রহণের ফলে রোগের উপসর্গগুলি সাধারণত ৭-১০ দিনের মধ্যে কমতে শুরু করে। তবে, গুরুতর ক্ষেত্রে রোগীকে আরও দীর্ঘ সময় চিকিৎসা নিতে হতে পারে। যদি রোগটি ভেজা বেরিবেরি হয় এবং হৃদরোগ সম্পর্কিত সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে, তবে হসপিটালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন।


বেরিবেরি রোগের জটিলতা (Complications of Beriberi)

যদি বেরিবেরি রোগের চিকিৎসা না করা হয়, তবে এটি মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে, যেমন হৃদরোগ, স্নায়ুজনিত সমস্যা এবং মৃত্যুও হতে পারে।
বেরিবেরি রোগ যদি সঠিক সময়ে শনাক্ত এবং চিকিৎসা না করা হয়, তবে এটি শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রতঙ্গের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ জটিলতা হলো:

১. হৃদরোগ (Heart Disease)

ভেজা বেরিবেরি রোগে শরীরে অতিরিক্ত পানি জমে যাওয়ার ফলে হৃৎপিণ্ডের উপর চাপ বাড়ে। এর ফলে হৃদযন্ত্রের কর্মক্ষমতা কমে যায় এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। রোগী শ্বাসকষ্ট অনুভব করতে পারেন এবং কিছু ক্ষেত্রে হৃদযন্ত্র বন্ধও হয়ে যেতে পারে।

২. স্নায়ুজনিত সমস্যা (Neurological Issues)

শুষ্ক বেরিবেরি রোগের মধ্যে স্নায়ুপ্রবাহের ক্ষতি হতে পারে, যার ফলে মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুজনিত কার্যক্রমে সমস্যা সৃষ্টি হয়। এতে রোগী স্মৃতিভ্রংশ, মনোভাবের পরিবর্তন এবং শরীরের অংশে অনুভূতি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

৩. পেশীর ক্ষতি (Muscle Damage)

শুষ্ক বেরিবেরি দীর্ঘদিন untreated থাকলে পেশী দুর্বল হয়ে পড়ে এবং রোগী পেশী সংকোচন বা প্যারালাইসিস অনুভব করতে পারেন। এই অবস্থায়, হাঁটাচলা এবং দৈনন্দিন কাজকর্মে সমস্যা দেখা দেয়।

৪. মৃত্যুঝুঁকি (Risk of Death)

যদি বেরিবেরি রোগের সঠিক চিকিৎসা না করা হয়, তবে এটি মৃত্যুর কারণও হতে পারে। ভেজা বেরিবেরি যদি দ্রুত চিকিৎসা না পায়, তাহলে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যু ঘটতে পারে। শুষ্ক বেরিবেরি দীর্ঘস্থায়ী হলে, স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে কোমায় চলে যেতে পারে।


বেরিবেরি রোগের প্রতিরোধ (Prevention of Beriberi)

এই রোগ প্রতিরোধের জন্য সুষম খাদ্য গ্রহণ এবং থায়ামিনের প্রয়োজনীয় পরিমাণ নিশ্চিত করতে হবে।
বেরিবেরি রোগ প্রতিরোধ করা একেবারেই সম্ভব যদি আমরা সঠিক খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখি এবং শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টির দিকে নজর রাখি। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ দেয়া হলো যেগুলি বেরিবেরি রোগ প্রতিরোধে সহায়ক:

১. সুষম খাদ্য গ্রহণ

থায়ামিনের অভাব প্রতিরোধের সবচেয়ে সহজ উপায় হলো সুষম খাদ্য গ্রহণ। খাবারে যদি থায়ামিন পর্যাপ্ত পরিমাণ থাকে, তবে এই রোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।

  • থায়ামিন সমৃদ্ধ খাদ্য যেমন বাদাম, মটরশুটি, চাল, ডাল, মাছ ইত্যাদি নিয়মিত খেতে হবে।
  • বিশেষ করে ব্রাউন রাইস এবং পোলাওর চাল অত্যন্ত কার্যকরী, কারণ এতে বেশি থায়ামিন থাকে।

২. ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট

যদি কেউ খাদ্য থেকে পর্যাপ্ত ভিটামিন বি১ না পায়, তবে থায়ামিন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা যেতে পারে। তবে সাপ্লিমেন্ট শুরু করার আগে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

৩. শিক্ষা এবং সচেতনতা

বেরিবেরি রোগ সম্পর্কে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো জরুরি। গ্রামাঞ্চলে যেখানে খাদ্যাভ্যাসের অভাব বেশি, সেখানে সঠিক শিক্ষা এবং পুষ্টি বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা উচিত।
সরকার এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংস্থা সমাজে এ বিষয়ে নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে, যেমন ভিটামিন বি১ সমৃদ্ধ খাদ্য বিতরণ বা সুষম খাদ্য বিষয়ে প্রশিক্ষণ।

৪. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা

বেরিবেরি রোগের প্রাথমিক উপসর্গ চিহ্নিত করতে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত। বিশেষ করে যাদের খাদ্যাভ্যাসে অস্বাস্থ্যকর দিক রয়েছে বা যারা পুষ্টিহীনতার শিকার, তাদেরকে বেশি সচেতন থাকতে হবে।

বাংলাদেশে বেরিবেরি রোগের প্রভাব (Beriberi in Bangladesh)

বাংলাদেশে অপুষ্টি এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাসের অভাবে বেরিবেরি রোগের প্রকোপ কিছু এলাকায় বেশি দেখা যায়।
বিশেষ করে দেশের গ্রামাঞ্চলে, যেখানে পুষ্টির অভাব এবং খাদ্য সংকট দেখা দেয়, সেখানে বেরিবেরি রোগ একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য সমস্যা। দেশব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তা এবং পুষ্টির মানের উন্নতি সাধন করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এই রোগটি কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

দারিদ্র্য এবং খাদ্য অভাব

বাংলাদেশের কিছু এলাকার মানুষ প্রধানত শ্বেত চাল বা শর্করা সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করে, যা থায়ামিনের অভাব তৈরি করে। সেই কারণে, গরিব জনগণের মধ্যে বেরিবেরি রোগের প্রকোপ বেশি। ধান এবং চালের উপর নির্ভরশীল জীবনযাত্রার ফলে, খাদ্যের বৈচিত্র্য কম এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব সৃষ্টি হয়।

অধিকারে সচেতনতা বৃদ্ধি

বাংলাদেশে স্বাস্থ্যকর্মীরা এবং সরকার কিছু অভিযান চালিয়ে বেরিবেরি রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। তবে, সমাজে পর্যাপ্ত সচেতনতা না থাকলে, অপুষ্টির কারণে বেরিবেরির মতো রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।


সারসংক্ষেপ: বেরিবেরি রোগের সচেতনতা এবং সঠিক চিকিৎসা

বেরিবেরি রোগ থেকে মুক্তি পেতে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সঠিক চিকিৎসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
যেহেতু বেরিবেরি একটি অপুষ্টিজনিত রোগ, তাই এর প্রতিকার সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং প্রাথমিক চিকিৎসার মাধ্যমে করা সম্ভব। বিশেষত থায়ামিনের অভাব পূরণের জন্য খাদ্য ও সাপ্লিমেন্টের গুরুত্ব অপরিসীম। তাছাড়া, সুষম খাদ্য গ্রহণ এবং যথাযথ চিকিৎসার মাধ্যমে বেরিবেরি রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

সারাংশ

  1. থায়ামিনের অভাব থেকে বেরিবেরি রোগ সৃষ্টি হয় এবং এই রোগের উপসর্গ স্নায়ু, পেশী এবং হৃদপিণ্ডের উপর প্রভাব ফেলে।
  2. শুষ্ক বেরিবেরি এবং ভেজা বেরিবেরি এই দুটি প্রধান ধরনের বেরিবেরি রোগ আছে, যার চিকিৎসা ভিন্ন।
  3. থায়ামিন সাপ্লিমেন্ট এবং সুষম খাদ্য দিয়ে রোগের প্রতিকার সম্ভব।
  4. বাংলাদেশে অপুষ্টি এবং খাদ্য অভাবের কারণে বেরিবেরি রোগ কিছু অঞ্চলে বেশি দেখা যাচ্ছে, তবে সচেতনতা বৃদ্ধি ও খাদ্য নিরাপত্তার উন্নতির মাধ্যমে এর প্রভাব কমানো সম্ভব।

জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর (FAQ) – বেরিবেরি রোগ সম্পর্কিত

প্রশ্ন ১: বেরিবেরি রোগ কি ছোঁয়াচে?
উত্তর: বেরিবেরি রোগ ছোঁয়াচে নয়, এটি ভিটামিন বি১ (থায়ামিন) এর অভাবে হয়। তাই এটা মূলত অপুষ্টির কারণে ঘটে, যা ব্যক্তির খাদ্যাভ্যাসের উপর নির্ভরশীল।

প্রশ্ন ২: বেরিবেরি রোগের জন্য কী ধরনের খাবার খাওয়া উচিত?
উত্তর: বেরিবেরি রোগ প্রতিরোধ করতে, থায়ামিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন বাদাম, ব্রাউন রাইস, মটরশুটি, মাছ, ডাল, মাংস এবং ডিম খাওয়া উচিত।

প্রশ্ন ৩: বেরিবেরি রোগের চিকিৎসা কতদিনে সম্পূর্ণ হয়?
উত্তর:
চিকিৎসা শুরু করার পর, ৭-১০ দিনের মধ্যে রোগীর উপসর্গ কমতে শুরু করে। তবে গুরুতর রোগীকে আরও কিছুদিন চিকিৎসা নিতে হতে পারে।

আরও জানুনঃ শর্করা জাতীয় খাবার কি কি: তালিকা, পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা


উপসংহার

বেরিবেরি রোগ একটি ভিটামিন বি১ এর অভাবজনিত রোগ, যা অপুষ্টি এবং ভুল খাদ্যাভ্যাসের কারণে সৃষ্টি হয়।
এই রোগটি চিকিৎসাযোগ্য এবং সঠিক খাদ্য ও সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের মাধ্যমে পূর্ণ সুস্থতা লাভ সম্ভব। তবে, এর প্রতিরোধের জন্য খাদ্য সচেতনতা এবং পুষ্টির প্রতি গুরুত্ব দেওয়া আবশ্যক। যারা এই রোগে আক্রান্ত, তাদের দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া উচিত এবং ভিটামিন বি১ সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করা জরুরি।

সচেতনতা বাড়ানো এবং সুষম খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে বেরিবেরি রোগ প্রতিরোধ সম্ভব এবং আমরা যদি খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করি এবং পুষ্টির দিকে নজর রাখি, তবে এই রোগটি সহজেই প্রতিরোধ করা যেতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top