বর্তমান বৈশ্বিক মানচিত্রে স্বীকৃত পৃথিবীতে মোট ১৯৫টি দেশ রয়েছে। এর মধ্যে ১৯৩টি জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য এবং ২টি দেশ (ভ্যাটিকান সিটি ও প্যালেস্টাইন) জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচিত। ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত এই তথ্য বৈধ এবং সর্বশেষ। তবে আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে পৃথিবীর দেশগুলোর সংখ্যা নিয়ে মাঝে মাঝে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। তাইওয়ান, কসোভো এবং পশ্চিম সাহারার মতো কিছু অঞ্চল আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত না হলেও নিজেদের স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে দাবি করে। এই নিবন্ধে আমরা পৃথিবীর কয়টি দেশ আছে, তাদের ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য, বৃহত্তম ও ক্ষুদ্রতম দেশসমূহ, বিতর্কিত অঞ্চল এবং ভবিষ্যতে নতুন দেশ গঠনের সম্ভাবনা নিয়ে একটি গভীর বিশ্লেষণ করবো।
পৃথিবীর মোট দেশ সংখ্যা: এক চমকপ্রদ বাস্তবতা
২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত পৃথিবীতে মোট ১৯৫টি স্বীকৃত দেশ রয়েছে। এর মধ্যে ১৯৩টি জাতিসংঘের সদস্য দেশ এবং ২টি (ভ্যাটিকান সিটি ও প্যালেস্টাইন) জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃত। অনেক সময় কিছু অঞ্চল নিজেদের স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে দাবি করে, কিন্তু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না। উদাহরণস্বরূপ, তাইওয়ান এবং কসোভো নিজেদের স্বাধীন রাষ্ট্র বলে ঘোষণা করলেও তাদের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জাতিসংঘের সদস্যপদ পাওয়ার জন্য কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হয়। প্রথমত, দেশটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হতে হবে, দ্বিতীয়ত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন হয়। এছাড়া, নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পাঁচ সদস্য (যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স) এর সম্মতি লাগবে। এই প্রক্রিয়া না মানলে কোনো দেশ জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করতে পারে না।
পৃথিবীর বৃহত্তম দেশ: ভৌগোলিক বৈচিত্র্য ও প্রভাব
বিশ্বের বৃহত্তম দেশগুলোর মধ্যে কিছু দেশ ভৌগোলিক আকারের দিক থেকে অপ্রতিরোধ্য। এই দেশগুলো শুধু ভৌগোলিকভাবে বড় নয়, বরং রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক প্রভাবেও শীর্ষে রয়েছে। চলুন আমরা বিশ্বের বৃহত্তম দেশগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করি:
১. রাশিয়া
- মোট এলাকা: ১৭.১ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার
- বিশ্বের মোট ভূমির প্রায় ১১% দখল করে
- রাশিয়া ইউরোপ থেকে এশিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত এবং এটির ভৌগোলিক বৈচিত্র্য অত্যন্ত বিস্তৃত। রাশিয়ার উত্তরাঞ্চলে তুন্দ্রা এবং বরফাবৃত অঞ্চল থেকে শুরু করে দক্ষিণাঞ্চলে বনভূমি এবং পর্বত রয়েছে। রাশিয়া পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দেশ হওয়ার কারণে এর ভূ-রাজনৈতিক এবং প্রাকৃতিক সম্পদের প্রভাব বিশ্বব্যাপী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২. কানাডা
- মোট এলাকা: ৯.৯৮ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার
- বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ
- কানাডা একটি শান্তিপূর্ণ এবং প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যপূর্ণ দেশ, যার উত্তর অংশে আর্কটিক অঞ্চলের বরফ এবং দক্ষিণে উন্নত নগরীকরণ রয়েছে। এর বিস্তৃত প্রাকৃতিক সম্পদ এবং ছোট জনসংখ্যার কারণে কানাডা বিশ্বের অন্যতম সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে পরিচিত।
৩. চীন
- মোট এলাকা: ৯.৬ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার
- বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম দেশ এবং জনসংখ্যার দিক থেকে শীর্ষে
- চীন একটি অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক শক্তিশালী দেশ, যা বিশ্বের উৎপাদন শিল্পের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটির বিশাল ভৌগোলিক অঞ্চল এবং বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক সম্পদ চীনকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশগুলোর একটি করে তুলেছে।
৪. যুক্তরাষ্ট্র
- মোট এলাকা: ৯.৮৩ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার
- যুক্তরাষ্ট্র একটি বৈশ্বিক শক্তি, যা প্রযুক্তি, অর্থনীতি এবং সামরিক ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী দেশ হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি একটি ফেডারেল রিপাবলিক, যার ভৌগোলিক বৈচিত্র্য এবং অর্থনৈতিক শক্তি অনন্য।
৫. ব্রাজিল
- মোট এলাকা: ৮.৫ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার
- এটি দক্ষিণ আমেরিকার বৃহত্তম দেশ এবং পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম দেশ
- ব্রাজিলের বিস্তৃত আমাজন রেইনফরেস্ট এবং সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক সম্পদ এটিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে তৈরি করেছে। ব্রাজিলের অর্থনীতি এবং ভৌগোলিক অবস্থান বিশ্বের বায়ুমণ্ডল এবং পরিবেশগত পরিস্থিতির ওপর গভীর প্রভাব ফেলে।
জনসংখ্যার ভিত্তিতে বৃহত্তম দেশসমূহ
ভৌগোলিকভাবে বড় দেশগুলোর পাশাপাশি, জনসংখ্যা দিক থেকেও পৃথিবীর কিছু দেশ বিশ্ব অর্থনীতির এবং রাজনীতির ক্ষেত্রে অত্যন্ত প্রভাবশালী। চলুন আমরা বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করি:
১. চীন
- জনসংখ্যা: প্রায় ১.৪ বিলিয়ন (২০২৪ সালের তথ্য অনুযায়ী)
- চীন বিশ্বের জনসংখ্যার দিক থেকে শীর্ষস্থানে রয়েছে এবং এর বিশাল জনসংখ্যা দেশের অর্থনৈতিক শক্তির একটি বড় কারণ। চীন বিশ্বের বৃহত্তম উৎপাদনকারী দেশ এবং এর বৃহৎ শ্রমশক্তি এটি বিশ্বের শীর্ষ অর্থনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে একটি করে তুলেছে।
২. ভারত
- জনসংখ্যা: প্রায় ১.৪ বিলিয়ন
- ২০২৪ সালের মধ্যে ভারত চীনের জনসংখ্যাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার পথে রয়েছে। ভারতের অর্থনীতি দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এর জনসংখ্যা বৈশ্বিক শ্রমবাজারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
৩. যুক্তরাষ্ট্র
- জনসংখ্যা: প্রায় ৩৩২ মিলিয়ন
- যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক এবং সামরিকভাবে অত্যন্ত শক্তিশালী একটি দেশ। এর বড় জনসংখ্যা এবং বৈচিত্র্যময় অর্থনীতি এটিকে একটি বৈশ্বিক কেন্দ্র হিসেবে স্থাপন করেছে।
৪. ইন্দোনেশিয়া
- জনসংখ্যা: প্রায় ২৭৫ মিলিয়ন
- ইন্দোনেশিয়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম দেশ এবং এর অর্থনৈতিক অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৫. পাকিস্তান
- জনসংখ্যা: প্রায় ২৪০ মিলিয়ন
- পাকিস্তান বিশ্বের অন্যতম জনবহুল দেশ এবং এর জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক অগ্রগতি এই দেশটিকে দক্ষিণ এশিয়ার প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সাহায্য করছে।
ক্ষুদ্রতম দেশসমূহ: এলাকা ও জনসংখ্যার দিক থেকে
বিশ্বের কিছু দেশ আয়তন ও জনসংখ্যার দিক থেকে ক্ষুদ্র, কিন্তু তারা তাদের ইতিহাস এবং সংস্কৃতির জন্য বিশিষ্ট। চলুন ক্ষুদ্রতম দেশগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করি:
১. ভ্যাটিকান সিটি
- মোট এলাকা: ০.৪৯ বর্গ কিলোমিটার
- জনসংখ্যা: প্রায় ৮০০ জন
- ভ্যাটিকান সিটি বিশ্বের সবচেয়ে ছোট দেশ এবং এটি রোমের মধ্যে অবস্থিত। এটি ক্যাথলিক ধর্মের কেন্দ্রস্থল এবং পোপের বাসস্থান। ভ্যাটিকান সিটি একটি সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় স্থল হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত।
২. মোনাকো
- মোট এলাকা: ২.০৮ বর্গ কিলোমিটার
- জনসংখ্যা: প্রায় ৩৯,০০০ জন
- মোনাকো ইউরোপের দক্ষিণে অবস্থিত এবং এর অর্থনীতি মূলত পর্যটন এবং ক্যাসিনো শিল্পের উপর নির্ভরশীল। এটি বিশ্বের অন্যতম গ্ল্যামারাস দেশ হিসেবে বিবেচিত। এটি আয়তনে ২য় ক্ষুদ্রতম দেশ।
৩. নাউরু
- মোট এলাকা: ২১ বর্গ কিলোমিটার
- জনসংখ্যা: প্রায় ১০,০০০ জন
- নাউরু পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম দ্বীপ রাষ্ট্র এবং এটি দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত। এর অর্থনীতি মূলত ফসফেট খননের উপর নির্ভরশীল ছিল, তবে বর্তমানে পর্যটন এবং আন্তর্জাতিক সাহায্যের উপর নির্ভরশীল।
৪. তুভালু
- মোট এলাকা: ২৬ বর্গ কিলোমিটার
- জনসংখ্যা: প্রায় ১১,০০০ জন
- তুভালু প্রশান্ত মহাসাগরের একটি ক্ষুদ্র দ্বীপ দেশ। এর অর্থনীতি বেশ সীমাবদ্ধ এবং প্রধানত কৃষি, মাছ ধরা, ও আন্তর্জাতিক সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে তুভালু প্রায়শই হুমকির সম্মুখীন, কারণ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পেলে এটি পানির নিচে চলে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
৫. সান মারিনো
- মোট এলাকা: ৬১ বর্গ কিলোমিটার
- জনসংখ্যা: প্রায় ৩৪,০০০ জন
- সান মারিনো ইউরোপের অন্যতম প্রাচীন স্বাধীন দেশ। এটি ইতালির মধ্যে অবস্থিত এবং ৩০১ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সান মারিনো একটি ছোট দেশ হলেও এর ইতিহাস এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য অসাধারণ। দেশটির অর্থনীতি মূলত পর্যটন, ব্যাংকিং এবং শিল্পের উপর নির্ভরশীল।
বিতর্কিত অঞ্চলসমূহ এবং রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি নিয়ে সমস্যা
বিশ্বের কিছু অঞ্চল তাদের স্বাধীনতা দাবি করে থাকলেও, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। এর মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য বিতর্কিত অঞ্চল হলো:
১. তাইওয়ান
- স্বীকৃতির অবস্থা: তাইওয়ান চীনের একটি প্রদেশ হিসেবে বিবেচিত, যদিও অনেক দেশ তাদের স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে গণ্য করে। ১৯৪৯ সাল থেকে, চীনের গণপ্রজাতন্ত্রী সরকার তাইওয়ানকে তাদের একটি বিচ্ছিন্ন অংশ হিসেবে দেখে আসছে। তাইওয়ান কার্যত স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে পরিচালিত হলেও, জাতিসংঘে তাদের সদস্যপদ নেই এবং চীন ক্রমাগত আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ করে অন্যান্য দেশগুলিকে তাইওয়ানকে স্বীকৃতি না দেওয়ার জন্য।
২. কসোভো
- স্বীকৃতির অবস্থা: কসোভো ২০০৮ সালে সার্বিয়া থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিল। যদিও প্রায় ১০০টি দেশ কসোভোকে স্বীকৃতি দিয়েছে, অনেক দেশ এখনও তাদের স্বাধীনতা মেনে নেয়নি। সার্বিয়া এবং কিছু প্রভাবশালী দেশ, যেমন রাশিয়া, কসোভোর স্বাধীনতার বিরোধিতা করে, যা তাদের জাতিসংঘের সদস্যপদ পাওয়ার পথে একটি বড় বাধা।
৩. প্যালেস্টাইন
- স্বীকৃতির অবস্থা: প্যালেস্টাইন পশ্চিম এশিয়ার একটি বিতর্কিত অঞ্চল। ইসরায়েলের সাথে তাদের দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের কারণে অনেক দেশ প্যালেস্টাইনকে স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, তবে এর স্বীকৃতি এখনও ব্যাপক নয়। জাতিসংঘে তারা পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
৪. পশ্চিম সাহারা
- স্বীকৃতির অবস্থা: পশ্চিম সাহারা মরক্কো এবং স্থানীয় সাহারাওয়ি জনগণের মধ্যে একটি বিরোধপূর্ণ অঞ্চল। এটি আফ্রিকার একটি বিতর্কিত অঞ্চল হিসেবে রয়ে গেছে এবং আন্তর্জাতিকভাবে এটির রাজনৈতিক স্থিতি নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে।
ভবিষ্যতে দেশ সংখ্যা পরিবর্তনের সম্ভাবনা
বিশ্বের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তনশীল, এবং ভবিষ্যতে নতুন দেশ গঠনের সম্ভাবনা সবসময় থেকে যায়। স্কটল্যান্ড যদি যুক্তরাজ্য থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করে, তবে এটি একটি নতুন স্বীকৃত দেশ হিসেবে যুক্ত হতে পারে। এছাড়া, কাতালোনিয়া (স্পেন) এবং কুর্দিস্তান (তুরস্ক, ইরাক এবং সিরিয়া) স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করছে, যা ভবিষ্যতে পৃথিবীর দেশ সংখ্যা পরিবর্তনের সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে পারে।
জাতিসংঘে সদস্যপদ প্রাপ্তির প্রক্রিয়া
জাতিসংঘের সদস্যপদ পেতে হলে, কোনো দেশকে প্রথমে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হতে হয়। এরপর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন হয়। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যের (যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন) সমর্থন। এই সমর্থন না পেলে, কোনো দেশ জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ লাভ করতে পারে না।
নতুন দেশ গঠনের ভবিষ্যদ্বাণী
বৈশ্বিক রাজনীতি ক্রমাগত পরিবর্তিত হচ্ছে, এবং নতুন দেশ গঠনের সম্ভাবনা বাস্তব। যেমন ২০১১ সালে দক্ষিণ সুদান স্বাধীনতা অর্জন করে জাতিসংঘের সদস্য হয়েছিল। ভবিষ্যতে অন্যান্য স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলগুলো, যেমন কাতালোনিয়া এবং কুর্দিস্তান, যদি তাদের স্বাধীনতা অর্জন করে, তাহলে পৃথিবীর দেশ সংখ্যা বাড়তে পারে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ কমনওয়েলথের কততম সদস্য: একটি বিশদ বিশ্লেষণ
উপসংহার
পৃথিবীতে ১৯৫টি স্বীকৃত দেশ রয়েছে, যার মধ্যে ১৯৩টি জাতিসংঘের সদস্য এবং ২টি পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র। এই দেশগুলো ভৌগোলিক এবং জনসংখ্যার দিক থেকে বৈচিত্র্যময়। বড় দেশগুলো যেমন রাশিয়া, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব রাজনীতিতে প্রভাবশালী, অন্যদিকে ক্ষুদ্র দেশগুলো যেমন ভ্যাটিকান সিটি এবং মোনাকো তাদের বিশেষ সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক প্রভাবের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ভবিষ্যতে নতুন দেশ গঠনের সম্ভাবনা থাকলেও, বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী পৃথিবীর দেশ সংখ্যা স্থিতিশীল রয়েছে।
পৃথিবীর কয়টি দেশ আছে? যদি এই বিষয়ে আপনার কোনো প্রশ্ন থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে নিচে মন্তব্য করুন। পোস্টটি যদি তথ্যবহুল মনে হয়, তবে এটি আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ!